শিক্ষার উদ্দেশ্যে যদি চাকুরীই হয়, তাহলে জীবনের উদ্দেশ্য কি? শিক্ষকরা বলতেন শিক্ষার জন্য এসো সেবার জন্য বেরিয়ে যাও। সমাজে শিক্ষকতা এক মহান ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে পরিচিত হলেও বর্তমানে তা অর্থের দিকে ধাবিত। যিনি যত অর্থে শক্তিশালী সমাজে যার কর্তৃত্ব আছে তিনিই আজ মহান। এ দৈন্য দশার একমাত্র কারণ মেধাবীমুখের নেতৃত্বহীনতা। পড়াশুনা যার জীবনে গতিহীন, সমাজ, রাষ্ট্র আজ তারই দখলে। সেধাবী মুখ পাচার হচ্ছে বিদেশে। এক পরিসংখ্যানে দেখেছি এ দেশের যে স্কলার ছাত্ররা বাইরের দেশে শ্রম দিচ্ছে যদি তারা এদেশে মূল্যায়ন পেত তাহলে বিশ্বের কোন দেশের কাছে বাংলাদেশকে হাত পাততে হতো না। এমনকি বিশ্বের নেতৃত্ব বাংলাদেশের মতো ক্ষুদ্র দেশ দিত। শিক্ষার প্রতি এ দৈন্য দশা দেখে মেধাবী মুখগুলো চলে যাচ্ছেন মহান এ পেশাবিমুখ হয়ে। নীতিহীন রাজত্বে তেলের দাম ঘি’র দামের চেয়ে বেশী বলে অশিক্ষা, কুশিক্ষা, সামান্য শিষ্টাচার গুলো পর্যন্ত আজ হারিয়ে গেছে মহাসাগরের অতল গভীরে। নজরুল বলেছিলেন মানুষের জীবনে শুরু আছে, শেষ আছে কিন্তু মধ্য নেই। যৌবনেই যদি উদ্দেশ্যহীন হয় তাহলে শুরু আর শেষে কি হবে? আমাদের জীবনের শুরু থাকতে হবে মধ্য থাকতে হবে শেষ ও থাকবে। শুরুটাই হবে মহান উদ্দেশ্যে জীবন চলবে সে লক্ষে, শেষ হবে তার বাস্তবায়নে। আমি দেশের সব অক্ষরকে বলবো তোমরা জ্বলে উঠো মেধাবীদের হাত দিয়ে আলোকিত করো উদ্দেশ্যহীন জাতিকে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বলবো, এ শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য লক্ষ্য নির্ধারন করুন, উদ্দেশ্য তৈরী করে, বাস্তবায়ন করুন। আমাদের সমাজের মেধাবীরা শিক্ষকতায় আসুন, তাদের উদ্দেশ্য ঘুরিয়ে দিন। দেশে সুদিন আসবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষ সোনালী ভবিষ্যতের প্রত্যাশাই করছি।
রাজ্যহীন রাজা, মেধাহীন জাতি, আত্মাহীন মানুষের পার্থক্য কোথায়? গতিশূন্য জাতিকে গতিশীল করতে যে দ্রুতিশীল ব্যক্তির দরকার তার যে খুবই অভাব। যেখানে সুপ্ত মেধার ত্বরণ প্রয়োজন সেখানে দ্বীপ্তিমান লোকের মন্দনের হাতছানি। সোনালী ভবিষ্যতে কালো মেঘের ছায়া। দেশে দেশপ্রেমিক মেধাবী নেতৃত্ব খুব প্রয়োজন। পরগাছা শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিচ্ছে। অপসংস্কৃতির কালো ছায়া সমাজকে কলুষিত করছে। ব্যতিচার ঘটছে আদব–কায়দা, শ্রদ্ধা–ভালবাসা, শিষ্টাচার ও মনুষত্ববোধে। অক্ষিগোলকের ব্যাসার্ধ কৃঞ্চিত হচ্ছে….
তথ্যানুসন্ধানে মেধার বিচ্ছুরণ ঘটাচ্ছে উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ গুণোত্তর ধারায় এ বৃত্তকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠবে মেধাবীসালার। ব–দ্বীপটিকে নেতৃত্বের শূন্য আসন থেকে ভূ–গোলকের চূড়াঁয় তুলবে অত্র কলেজের ক্যাডেটরা। দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলি, ভার্সিটির মেধাবী ছাত্রদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে কলেজটি তৈরি হয়েছে মেধাবী মাইটোকড্রিয়াতে। ৫ম বৃত্তি, জুনিয়র বৃত্তি, এসএসসিসহ শতভাগ পাশই প্রমানিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানের সর্বস্তরের জনশক্তি কতটুকু সচেতন। স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের প্যারেড–এ ক্যাডেটদের পদধ্বনি বিজয়ের ১ম স্থানটি তাদেরই হাতে। আমাদের এ সফলতাই প্রমান করে জাতির ভবিষ্যৎ সিপাহসালার হচ্ছে এ কলেজের ক্যাডেটবৃন্দ। অভিভাবকদের গঠণমূলক সমালোচনা, শিক্ষক, কর্মকূশলী, ইন্সট্রাক্টর, দায়িত্বশীল ও কর্মচারির নিবিষ্ট মনোযোগ ও কর্মতৎপরতায় কলেজটি হয়ে উঠেছে আকাশের মতো বিশাল।
এ অগ্রযাত্রায় অভিভাবক ও সুধীমহলের অবদান অনস্বীকার্য।
শিক্ষা ও সংস্কৃতির উৎকর্ষ জাতির উন্নয়নের মহীসোপান, জাতিয় উন্নয়ন ও অগ্রগতির নিয়ন্তা। শিক্ষা ও সংস্কৃতি সঠিক মাপে বিকশিত হলে জাতি হয় সৌকর্যমন্ডিত। উন্নত জাতি গঠনে উন্নত শিক্ষা–পরিকল্পনা ও নিজস্ব সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। একবিংশ শতাব্দির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিভিন্ন জাতি যখন শিক্ষা ও সংস্কৃতির উন্নয়ন ও বিকাশে অহর্নিশ কর্মব্যস্ত তখন আমরা এক স্মৃতি হীন–বিস্মৃত জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছি। স্বাধীনতার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পরও আমরা জাতির জন্য একটি গ্রহণযোগ্য শিক্ষা পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারিনি। আর সংস্কৃতির নামে যা অবশিষ্ট আছে তাতো বিদেশী সংস্কৃতির উচ্ছিষ্ট বই কিছু নয়। শিক্ষা পদ্ধতির জোয়ার ভাটার ন্যায় সময়ে সময়ে পরিবর্তন গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। তবু এগিয়ে যেতে হবে দৃপ্ত পদক্ষেপে, এগিয়ে যাওয়ার সে শপথে বলিয়ান হয়ে উইজডম স্কুল এন্ড কলেজ এদেশের শিক্ষাঙ্গনে ধ্রুব তারার ন্যায় জ্বলে উঠেছে জ্বল জ্বল করে। আগামী প্রজন্মের কর্ণধারদের তৈরীতে সু–নির্দিষ্ট পাঠ পরিকল্পনার পাশাপাশি সুস্থ্য সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা ও একজন আদর্শ, সুনাগরিক তৈরীর জন্য এখানে রয়েছে সহ পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম। আগামী দিনে এদেশকে নেতৃত্ব দেয়ার মত যোগ্য নাগরিক তৈরীই এ প্রতিষ্ঠানের লক্ষ।
আমি এর সঠিক সাফল্য কামনা করছি।